মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব সংবাদদাতা : টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বাড়ছে সুরমা নদীর পানি। সুরমার পানি সিলেটের সবকটি পয়েন্টেই বিপদৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
এদিকে, টানা দুদিন বৃদ্ধির পর শুক্রবার সুনামগঞ্জে নদীর পানি কিছুটা কমেছে। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পানি ফের বাড়তে পারে বলে শঙ্কা সংশ্লিস্টদের। শুক্রবার রাত একটায় এ রিপোর্ট লেখার সময়ও সিলেটে বৃষ্টি হচ্ছিলো।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সুরমার কানাইঘাট পয়েন্টের বিপদসীমা ১২ দশমিক ২৫ মিটার। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় বিপদসীমার ১ দশমিক ১৬ মিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
সিলেট পয়েন্টে সুরমা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও রাতেই তা অতিক্রম করেছে। এ পয়েন্টে বিপদসীমা হচ্ছে ১০ দশমিক ১৫ মিটার। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
পানি বাড়ছে কুশিয়ারা নদীরও। শুক্রবার সকাল ৬টায় আমলসীদে কুশিয়ারার পানি বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। সন্ধ্যা ৬টায় এ পয়েন্টে পানি ছিল ১ দশমিক ৫৭ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।।
শেওলা পয়েন্টে বিপদসীমা ১২ দশমিক ৫০ মিটার। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় এ পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
শেরপুরে কুশিয়ারা বিপদসীমা অতিক্রম করেছিল বৃহস্পতিবার। শুক্রবার তা আরো বেড়েছে। সন্ধ্যা বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হচ্ছিলো পানি।
সীমান্তবর্তী পাহাড়ী নদী সারির পানিও বাড়ছে। সকালে সারিঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার নিচে থাকলেও সন্ধ্যা ৬টায় তা বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। লোভা নদীর পানিও শুক্রবার বেড়েছে।
এদিকে, শুক্রবার সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কমেছে নদীর পানি। তবে এখনও প্লাবিত রয়েছে জেলার সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, দোয়ারাবাজার ও ধর্মপাশা উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কয়েক শতাধিক গ্রাম। এসব উপজেলায় বেশির ভাগ সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। নিচু এলাকার ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ডুকে পড়েছে।
এছাড়াও জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২৩৮ টি প্লাবিত হয়েছে। এরমধ্যে ১৮৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান স্থগিত করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ থাকবে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব কয়টি স্কুলকে আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা হয়েছে। এছাড়াও জেলায় সরকারিভাবে ১০ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুণর্বাসন কর্মকর্তা ফরিদুল হক বলেন, ‘তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারা এবং সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় বন্যার্তদের মধ্যে বন্টনের জন্য বৃহস্পতিবার ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নগদ দেওয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদ জানান, ৬ টি উপজেলার ১২ হাজার ৮০০ ঘরবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এতে ৬৬ হাজার লোক পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছেন। বন্যার্তদের প্রশাসন ৩ লক্ষ টাকা, ৩ শ মেট্রিকটন চাল ও শুকনো খাবার প্রদান করেছে।